নিয়মিত আখরোট খেলে কি হয়? আখরোটের সকল স্বাস্থ্য উপকারিতা
আখরোট
আখরোট (Walnut) হলো বাদাম জাতীয় একটি ফল। আখরোটের বৈজ্ঞানিক নাম হলো Juglans regia. আখরোট মূলত জুগল্যান্ডেসি (Juglandaceae) পরিবারের গাছ থেকে উৎপন্ন হয়। আখরোট শক্ত খোলসে ঢাকা থাকে এবং এর ভেতরে থাকে বাদামি রঙের একটি অংশ। এটা খানিকটা মিষ্টি এবং পুষ্টিগুনে ভরপুর। আখরোটে প্রচুর পরিমাণে স্বাস্থ্যকর ফ্যাট, ভিটামিন, প্রোটিন এবং খনিজ থাকে, এজন্য এটা সুপারফুড হিসেবেও পরিচিত।
আখরোটের পুষ্টিগুণ
পোস্টসূচীপত্রঃআখরোট পুষ্টিগুণে ভরপুর একটি স্বাস্থ্যকর খাদ্য। আখরোটে অনেক পুষ্টি উপাদান রয়েছে। প্রতি ১০০ গ্রাম আখরোটে পুষ্টি উপাদানঃ
- ক্যালোরি – ৬৫৪
- প্রোটিন – ১৫ গ্রাম
- কার্বোহাইড্রেট – ১৩.৭ গ্রাম
- ফ্যাট – ৬৫.২ গ্রাম
- ফাইবার – ৬.৭ গ্রাম
- ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড – ৯,০৮০ মিলিগ্রাম
- ভিটামিন-ই – ০.৭ মিলিগ্রাম
- ভিটামিন-বি – ০.৫৩৭ মিলিগ্রাম
- ম্যাগনেসিয়াম – ১৫৮ মিলিগ্রাম
- ফসফরাস – ৩৪৬ মিলিগ্রাম
- জিঙ্ক – ৩.০৯ মিলিগ্রাম
আখরোট খাওয়ার ১০ উপকারিতা, আখরোট খেলে কি হয় ?
- মস্তিষ্কের জন্য উপকারী – আখরোট মস্তিষ্কের কার্যকারিতা ক্ষমতা বৃদ্ধি করে, স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি করে।
- হৃদরোগ প্রতিরোধে সহায়তা করে – হার্টের রক্তনালির কার্যক্ষমতা উন্নত করে এবং রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে।
- ত্বক ও চুলের যত্নে আখরোট – আখরোটে থাকা প্রাকৃতিক উপাদান গুলো আমাদের ত্বককে সতেজ ও উজ্জ্বল রাখে এবং চুলের গোড়া মজবুত করে চুল পড়া কমায়।
- ওজন নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে – নিয়মিত সঠিক পদ্ধতি মেনে আখরোট খেলে ওজন নিয়ন্ত্রণে থাকে।
- ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে সহায়ক – রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে এবং ডায়াবেটিসের ঝুঁকি কমায়।
- হাড়ের শক্তি বৃদ্ধি করে – হাড়কে মজবুত করে এবং হাড়ের ক্ষয় রোধ করে।
- ঘুম ভালো হয় – যাদের রাতে ঘুৃম হয় না, তাদেরকে আখরোট খাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়ে থাকে।
- প্রজনন স্বাস্থ্য উন্নত করে – পুরুষদের স্পার্মের গুনগত মান উন্নয়ন করে এবং নারীদের প্রজনন স্বাস্থ্যেও ইতিবাচক প্রভাব ফেলে।
- ক্যান্সার প্রতিরোধে সহায়ক – আখরোটে থাকা অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট ক্যান্সারের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে।
- গাঁটে ব্যথা রোগীদের জন্য উপকারী – শরীরের বিভিন্ন প্রদাহ কমাতে সাহায্য করে।
আখরোট খাওয়ার সঠিক পদ্ধতি
আখরোট বিভিন্ন ভাবে খাওয়া যায়। যেমনঃ কাঁচা অবস্থায় খাওয়া যায়, আখরোট গুড়ো করেও খাওয়া যায়, আবার অনেকে ভিজিয়েও খেয়ে থাকে।
সবচেয়ে ভালো হয় আখরোট কাঁচা অবস্থায় খেলে। কাঁচা অবস্থায় খেলে এতে থাকা ভিটামিন, খনিজ এবং ওমেগা-৩ ফ্যাটি এসিড অক্ষুণ্ণ থাকে। প্রতিদিন ২-৪ টি আখরোট খাওয়া যথেষ্ট।
আখরোট ভিজিয়ে খেলে সেটা হজমের জন্য অনেক উপকার হয়। হজম শক্তি বৃদ্ধি করতে রাতে ২-৩ টি আখরোট পানিতে ভিজিয়ে রাখুন এবং সকালে খোসা ছাড়িয়ে খেয়ে নিন।
আখরোট ব্লেন্ডারে গুড়া করে বিভিন্ন খাবারের সাথে খাওয়া যায়। যেমন- দুধ, স্মুদি ইত্যাদির সাথে মিশিয়ে খেতে পারেন। এটি খাবারের স্বাদ বাড়ায়।
সতর্কতা – অতিরিক্ত আখরোট খাওয়া থেকে বিরত থাকুন কারণ এতে হজমের সমস্যা বা অ্যালার্জি সমস্যা হতে পারে।
এখানে কমেন্ট করুন
comment url