স্যামন মাছের তেলের উপকারিতা। স্যামন মাছের বিভিন্ন পদ
স্যামন মাছ
স্যামন মাছ(Salmon) হলো উত্তর আটলান্টিক এবং প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের একটি খুবই জনপ্রিয় মাছ। এটি নদী ও সমুদ্র উভয় জায়গাতেই পাওয়া যায়। স্যামন মাছ মিঠা পানিতে জন্মায় এবং পরবর্তীতে তারা সমুদ্রে চলে যায়। প্রজননের সময় তারা আবার মিঠা পানিতে ফিরে আসে।
স্যামন মাছের বেশ কয়েকটি প্রজাতি রয়েছে। যেমনঃ
- চুম স্যামন
- কিং স্যামন
- পিঙ্ক স্যামন
- কোহো স্যামন
- ককানি স্যামন
- আটলান্টিক স্যামন
স্যামন মাছের বৈশিষ্ট্য
পোস্টসূচীপত্রঃস্যামন মাছের বৈশিষ্ট্য বেশ বৈচিত্র্যময়। এই মাছের বৈজ্ঞানিক নাম 'Oncorhynchus'। স্যামন মাছ 'Salmonidae' পরিবারের অন্তর্গত। সাধারণত স্যামন মাছের বাহ্যিক রঙ রুপালি বা সোনালী হয়ে থাকে। এই মাছের পাখনা প্রশস্ত এবং শক্তিশালী হয়। শ্যামল মাছের মাংস বা ভেতরের অংশ কমলা বা গোলাপি রঙের হয়ে থাকে। তবে এই মাছের বিভিন্ন প্রজাতি থাকায়, প্রজাতি ভেদে এদের রঙ বা বৈশিষ্ট্য কিছুটা আলাদা হয়ে থাকে।
স্যামন মাছের পুষ্টিগুণ
স্যামন মাছ অনেক পুষ্টি সমৃদ্ধ একটি মাছ। স্যামন এর পুষ্টিগুণের কারণে একে সুপারফুড বলা হয়। স্যামন মাছের প্রধান পুষ্টিগুণ গুলো নিচে দেওয়া হলোঃ
- প্রোটিন
- ভিটামিন-ডি
- ভিটামিন-বি
- ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড
- অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট
- পটাশিয়াম
- জিঙ্ক
- আয়রন
স্যামন মাছের তেলের উপকারিতা
স্যামন মাছের তেলে অনেক উপকারিতা রয়েছে। এরমধ্যে উল্লেখযোগ্য কিছু উপকারিতা নিচে দেওয়া হলোঃ
- দৃষ্টি শক্তি বৃদ্ধি করে – স্যামন মাছের তেলে এমনকিছু প্রাকৃতিক উপাদান রয়েছে যা আমাদের চোখের শুষ্কতা দূর করে এবং দৃষ্টি শক্তি বৃদ্ধি করে।
- প্রদাহ কমায় – স্যামন মাছের তেলে উচ্চ পরিমাণে ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড রয়েছে, যা প্রদাহ কমাতে সাহায্য করে।
- মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা বৃদ্ধি করে – স্যামন মাছের তেল ডিমেনশিয়া বা আলঝেইমার রোগের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে এবং মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা উন্নত করে।
- হজমে সহায়তা করে – স্যামন তেল অন্ত্রের স্বাস্থ্য ভালো রাখে এবং হজম শক্তি বৃদ্ধি করে।
- ত্বকের ভালো রাখে – স্যামন মাছের তেলে অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেন্টারি গুণ ত্বকের স্বাস্থ্য ভালো রাখে এবং ত্বকের শুষ্কতা দূর করে।
- ভিটামিন-D এর উৎস – স্যামন মাছের তেলে ভিটামিন-D রয়েছে। যা আমাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় এবং হাড়ের শক্ত করে।
স্যামন মাছ ওজন কমাতে সহায়তা করে। স্যামন মাছে উচ্চ প্রোটিন এবং ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড রয়েছে, যা ওজন কমাতে সাহায্য করে এবং ওজন কমানোর সময় শরীরের মাসল মেইনটেইন করে।
স্যামন মাছ ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য খুবই ভালো। স্যামন মাছের ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড হৃদরোগের ঝুঁকি কমায় এবং ইনসুলিন প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। স্যামন মাছে থাকা কার্বোহাইড্রেট রক্তে শর্করার মাত্রা বৃদ্ধি করে।
ফ্রেশ স্যামন মাছ চেনার উপায়
আমাদের দেশে তাজা স্যামন মাছ পাওয়া যায় না। বাংলাদেশ স্যামন মাছ আমদানি করে। সাধারণত আমরা বিভিন্ন সুপারশপ গুলোতে স্যামন মাছ দেখতে পাই ফ্রোজেন অবস্থায়। এক্ষেত্রে ফ্রোজেন মাছ ক্রয়ের সময় প্যাকেজিংয়ে বরফের কোনো স্ফটিক বা ক্ষতিগ্রস্ত অংশ থাকলে বুঝবেন মাছটি ভালোভাবে সংরক্ষণ করা হয়নি।
স্যামন মাছ দিয়ে কোন কোন পদ রান্না করা যায়?
বিশ্বজুড়ে স্যামন মাছের অনেক সুস্বাদু রেসিপি রয়েছে। নানা ধরনের পদ রান্না করা যায় এই মাছ দিয়ে। এরমধ্যে সবচেয়ে জনপ্রিয় কিছু পদ নিচে উল্লেখ করা হলোঃ
- গ্রিলড স্যামন
- স্যামন ফিশ কারি
- স্যামন স্টেক
- স্যামন মাছের স্যুপ
- স্যামন তন্দুরি
- স্যামন ফিশ ফ্রাই
স্যামন মাছের দাম কত?
যেহেতু বাংলাদেশ স্যামন মাছ আমদানি করে। তাই এই মাছের দাম তুলনামূলক একটু বেশি। বর্তমানে স্যামন মাছের দাম প্রতি কেজি ১৮০০ - ৩০০০ টাকা প্রায়। দাম নির্ভর করে মাছের গুনগত মান এবং মাছের উৎসের উপর। স্যামন মাছ আমাদের দেশে বিভিন্ন সুপারশপ এবং কিছু অনলাইন প্লাটফর্ম গুলোতে পাওয়া যায়। যেমন - দারাজ, চালডাল, ইত্যাদি।
এখানে কমেন্ট করুন
comment url