ইউটিউব ব্লগিং করে মাসে লাখ টাকা ইনকাম
ইউটিউব ব্লগিং কি?
ইউটিউব হলো একটি ভিডিও প্লাটফর্ম। বিভিন্ন ব্যক্তি ভিডিও আকারে বিভিন্ন বিষয়বস্তু তৈরি করে এবং ইউটিউবে আপলোড করার মাধ্যমে অর্থ উপার্জন করে।
ইউটিউবে চ্যানেল তৈরী
পোস্টসূচীপত্রঃইউটিউবে চ্যানেল তৈরী করুন। গুগলে বা ইউটিউবে এই বিষয়ে অনেক ভিডিও পেয়ে যাবেন। ভিডিও দেখে সঠিক নিয়মে আগে ইউটিউব চ্যানেল তৈরী করতে হবে। চ্যানেল তৈরি করার সময় আপনার চ্যানেলের জন্য একটা ইউনিক নাম সিলেক্ট করবেন। আপনার চ্যানেলের জন্যে প্রোফাইল পিকচার এবং কভার ফটো নির্বাচন করুন। About section এ আপনার চ্যানেলের বিষয়বস্তু সম্পর্কে লিখুন। এরপর আপনি যে বিষয়ে পারদর্শী সেই বিষয়ে ভিডিও আপলোড করুন।
ইউটিউব ভিডিও তৈরির সফটওয়্যার
ইউটিউবে ভিডিও আপলোড করার জন্যে আপনাকে প্রথমে ভিডিও চিত্র ধারণ করতে হবে এবং ভিডিও প্রফেশনাল মানের করতে হলে এডিট করতে হবে। আপনি দুই ভাবে ভিডিও এডিট করতে পারেন
- মোবাইলের মাধ্যমে
- কম্পিউটার / ল্যাপটপের মাধ্যমে
মোবাইলের মাধ্যমে ভিডিও এডিট করার জন্যে নিম্নোক্ত অ্যাপ/সফটওয়্যার গুলো ব্যবহার করতে পারে
- KineMaster
- Capcut
- VN video editor
এই সফটওয়্যার গুলো সহজেই ব্যবহার করতে পারবেন। ফ্রিতে ব্যবহার করা যায় এবং প্রফেশনাল লেভেলের ইফেক্ট বা এনিমেশন ভিডিওতে সংযোগ করতে পারবেন।
কম্পিউটারের মাধ্যমে প্রফেশনাল ভিডিও এডিট করতে এই সফটওয়্যার গুলো ব্যবহার করতে পারেন
- Adobe Premiere Pro
- DaVinci Resolve
- Filmora
ইউটিউব ভিডিওতে ভিউ বাড়ানোর উপায়
আমরা যখন প্রথম ইউটিউব চ্যানেল খুলবো। স্বাভাবিক ভাবেই আমাদের চ্যানেলে কোনো ফলোয়ার থাকবে না। তাই কোনো ভিডিও ভিউ ও হবেনা। ভিডিও ভিউ বাড়ানোর জন্য বেশ কিছু কৌশল অবলম্বন করতে হবে
- ইউনিক কন্টেন্ট আপলোড
- ভিডিওর সাইজ
- আকর্ষণীয় টাইটেল
- ভিডিওতে আকর্ষণীয় থাম্বনেইল
- নিয়মিত কন্টেন্ট আপলোড
- ট্রেন্ডিং ভিডিও
ইউনিক কন্টেন্ট আপলোড – আপনার মতো অনেকেই ইউটিউবে ভিডিও আপলোড করে থাকে। এজন্য অন্যদের থেকে আলাদা টাইপের ভিডিও আপলোড করার চেষ্টা করুন। কেননা মানুষ নিত্যনতুন বিষয়ের ভিডিও পছন্দ করে। এমন ভিডিও আপলোড করুন যাতে মানুষের কাছে সহজেই আকর্ষণীয় হয়।
ভিডিওর সাইজ – ভিডিও আপলোড করার সময় খেয়াল রাখবেন, আপনার ভিডিও যেন বেশি বড় না হয়। মানুষ বড় ভিডিও দেখতে পছন্দ করে না। ছোট ছোট ভিডিও আপলোড করবেন। আবার বেশি ছোট যেন না হয়ে যায়। প্রয়োজনে বড় ভিডিও ছোট ছোট করে কেটে কেটে আপলোড করবেন।
আকর্ষণীয় টাইটেল – আপনার ভিডিওতে আকর্ষণীয় টাইটেল দিবেন। যাতে মানুষ আপনার ভিডিও টাইটেল দেখেই ভিডিওতে ক্লিক করার আগ্রহ প্রকাশ করে।
ভিডিওতে আকর্ষণীয় থাম্বনেইল – যে বিষয়ে ভিডিও তৈরি করেছেন, সেই বিষয়ের উপর আকর্ষণীয় একটি থাম্বনেইল ভিডিও তে যুক্ত করবেন। প্রফেশনাল এবং চোখে পড়ার মতো থাম্বনেইল তৈরি করুন।
নিয়মিত কন্টেন্ট আপলোড – আপনার চ্যানেলে নিয়মিত ভিডিও আপলোড করুন। অন্তত প্রতি সপ্তাহে ১/২ টি ভিডিও আপলোড করুন। ভিডিও আপলোডের ধারাবাহিকতা বজায় রাখুন, এতে আপনার দর্শকরা সহজেই আপনার চ্যানেলের সাথে যুক্ত থাকবে।
ট্রেন্ডিং ভিডিও – যখন যেই বিষয়টা ট্রেন্ডিংয়ে থাকবে, তখন সেই বিষয়ের উপর ভিডিও তৈরি করে আপলোড করার চেষ্টা করুন। এতে করে খুব কম সময়েই জনপ্রিয়তা লাভ করা যায়।
ইউটিউব কত হাজার ভিউতে কত টাকা দেয়?
ইউটিউব ভিউ থেকে ইনকামের বিষয়টা বিভিন্ন ফ্যাক্টরের ওপর নির্ভর করে। যেমনঃ CPM, CPC, RPM, এবং বিভিন্ন দেশের দর্শকদের উপর।
CPM কি?
CPM (Cost Per Mille) হলো প্রতি ১০০০ ভিউতে বিজ্ঞাপন দাতারা ইউটিউব কে কত টাকা দিচ্ছে সেটা। CPM এর রেঞ্জ সাধারণত 0.5$ থেকে 10$ পর্যন্ত হয়। বিষয়ভেদে এর থেকে বেশিও হতে পারে। যেমন - ব্লগিং বা ফানি ভিডিওতে CPM 1$ - 3$, টেক রিলেটেড ভিডিও তে CPM 10$+
CPC কি?
CPC (Cost Per Click) হলো প্রতি ক্লিকে বিজ্ঞাপন দাতা কত টাকা দিচ্ছে সেটা।
RPM কি?
RPM (Revenue Per Mille) হলো প্রতি ১০০০ ভিউতে কনটেন্ট ক্রিয়েটর রা কত টাকা আয় করছেন সেটা। বিজ্ঞাপন দাতারা প্রতি ১০০০ ভিউতে ইউটিউব কে যত টাকা দেয় তার ৪৫% ইউটিউব রাখে, আর ৫৫% কনটেন্ট ক্রিয়েটর দের দেয়। RPM সাধারণত 1$ থেকে 5$ হয়।
দর্শকদের দেশ
দর্শকরা কোন দেশ থেকে আপনার ভিডিও টি দেখছে ইউটিউব এর ইনকাম অনেকাংশে এটার উপর নির্ভর করে। উন্নত দেশগুলোতে বিজ্ঞাপনের দাম বেশি। তাই CPM, RPM বেশি। বাংলাদেশের মতো দেশ গুলোতে CPM 0.2$ থেকে 2$
ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইবার বাড়ানোর উপায়
কনটেন্ট তৈরির সময় মাথায় রাখতে হবে, আপনার কনটেন্ট যেন মানসম্মত এবং আকর্ষণীয় হয়। যেকোনো একটি বিষয় নিয়ে ভিডিও করার চেষ্টা করবেন। যেমন - ট্রাভেল, ফুড, টেক, এডুকেশন, ফানি কন্টেন্ট ইত্যাদি। নিয়মিত ভিডিও আপলোড করার চেষ্টা করুন। প্রাসঙ্গিক এবং আকর্ষণীয় থাম্বনেইল তৈরি করুন।ভিডিওর প্রথম ৩০ সেকেন্ড দর্শকদের মনোযোগ ধরে রাখার চেষ্টা করুন। আপনার ভিডিওর প্রথম ৩০ সেকেন্ডে এমন কিছু চিত্র দেখাবেন বা এমন কিছু কথা বলবেন যেন মানুষ স্কিপ করতে না পারে। আপনার ইউটিউব চ্যানেলের ভিডিও বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন, বিশেষ করে আপনার নিশ রিলেটেড বিভিন্ন কমিউনিটি গ্রুপে শেয়ার করুন। আপনার সাবস্ক্রাইবারদের জন্য আকর্ষণীয় পুরস্কার ঘোষণা করুন। আপনি যে নিশ নিয়ে ভিডিও তৈরি করছেন সেই একই নিশের ইউটিউবারদের সাথে কাজ করুন, এতে তাদের চ্যানেলের সাবস্ক্রাইবার আপনার চ্যানেলে আসতে পারে। দর্শকদের কমেন্টের উত্তর দিন, মাঝে মাঝে চ্যানেল থেকে লাইভ করেন। ট্রেন্ডিং টপিক নিয়ে ভিডিও তৈরি করেন, এতে দ্রুত ভিউ এবং সাবস্ক্রাইবার বাড়ে।
ইউটিউব চ্যানেল ভেরিফাই করার নিয়ম
আপনার যদি একটি ইউটিউব চ্যানেল থেকে থাকে এবং আপনার চ্যানেলে যদি ১ লাখ সাবস্ক্রাইবার থাকে, কেবলমাত্র তখনই আপনি ভেরিফাই এর জন্য আবেদন করতে পারবেন। আপনার চ্যানেল টি ভেরিফাই করতে এই লিংকে ক্লিক করুন। তাহলে সরাসরি আপনি ইউটিউব ভেরিফিকেশন পেজে যেতে পারবেন। ইউটিউব ভেরিফিকেশন পেজে আসার পর আপনি আপনার দেশ নির্বাচন করুন এবং আপনার ফোন নাম্বার প্রদান করুন। এরপর SMS এর মাধ্যমে আপনার কাছে একটি ভেরিফিকেশন কোড পাঠানো হবে অথবা একটি স্বয়ংক্রিয় ফোন কলের মাধ্যমে ভেরিফিকেশন কোড জানানো হবে। ভেরিফিকেশন কোড পাওয়ার পর উক্ত কোডটি লিখুন এবং Submit বাটনে ক্লিক করুন। ভেরিফিকেশন সফল হলে চ্যানেলটি ভেরিফাইড হবে। আপনাকে একটি কনফার্মেশন বার্তার মাধ্যমে জানিয়ে দেয়া হবে। আপনার চ্যানেল ভেরিফাই হলে, আপনার চ্যানেলের নামের পাশে একটি টিক চিহ্ন আসবে।
এখানে কমেন্ট করুন
comment url