অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং কি? অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করে আয় ইনকাম

অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং কি? 

অন্যের প্রোডাক্ট বা পণ্য মার্কেটিং করে সেল জেনারেট করার মাধ্যমে কমিশন উপার্জন করাই হলো অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং। 



পোস্টসূচীপত্রঃধরুন, আপনার একটি ইউটিউব চ্যানেল অথবা একটি ওয়েবসাইট আছে। আপনি আপনার ইউটিউব চ্যানেলের ভিডিওর মধ্যে অথবা আপনার ওয়েবসাইটের পোষ্টের মধ্যে X নামক একটি কোম্পানির প্রোডাক্টের লিংক শেয়ার করেছেন। কোন ব্যক্তি যদি ঐ লিংকে ক্লিক করে প্রোডাক্ট টি ক্রয় করে, তাহলে ঐ X নামক কোম্পানিটি আপনাকে নির্দিষ্ট পরিমাণ কমিশন প্রদান করবে। এটাকেই বলা হয় এফিলেন্ট মার্কেটিং। 

কিভাবে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং শুরু করবো?

অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং শুরু করতে হলে আপনাকে বেশ কয়েকটি বিষয় মাথায় রাখতে হবে। যেমন

  1. একটি নির্দিষ্ট নিশ (Niche) নির্বাচন 
  2. একটি প্লাটফর্ম তৈরি 
  3. অ্যাফিলিয়েট নেটওয়ার্কে যোগদান  
  4. কনটেন্ট তৈরি 
  5. লিঙ্ক ব্যবহার 
  6. মার্কেটিং 

একটি নির্দিষ্ট নিশ (Niche) নির্বাচন – অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করার প্রথম ধাপ হলো নির্দিষ্ট একটি নিশ নির্বাচন করা এবং সেই নিশ নিয়ে কাজ করা। অর্থাৎ আপনি যেকোনো একটি বিষয় নিয়ে কাজ করবেন। সেটা হতে পারে - clothing, mobile accessories, travelling এমন আরো অনেক বিষয় আছে যেগুলো নিয়ে আপনি কাজ করতে পারেন। তবে মনে রাখবেন যেকোনো একটি বিষয় নিয়ে কাজ করতে হবে আপনাকে। এমন একটি নিশ নিয়ে কাজ করবেন, যেটাতে আপনার আগ্রহ রয়েছে বা যেই নিশ নিয়ে কাজ করতে আপনি স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন।

একটি প্লাটফর্ম তৈরি – নির্দিষ্ট একটি নিশ নির্বাচন করার পর আপনাকে একটি প্ল্যাটফর্ম তৈরি করতে হবে। যেমন - ওয়েবসাইট, ইউটিউব চ্যানেলের মাধ্যমে নির্বাচনকৃত নিস নিয়ে কাজ করা। 

অ্যাফিলিয়েট নেটওয়ার্কে যোগদান – বিভিন্ন অনলাইন প্ল্যাটফর্ম গুলোতে যুক্ত হন, যারা অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং অফার করে। জনপ্রিয় কিছু অ্যাফিলিয়েট প্ল্যাটফর্ম 

এগুলো ছাড়াও এরকম আরো প্ল্যাটফর্ম রয়েছে। উপরে উল্লেখিত প্রতিটি প্লাটফর্ম আলাদা আলাদা পণ্য এবং কমিশনের জন্যে জনপ্রিয়। আপনার নির্বাচিত নিশ এর জন্যে সঠিক প্ল্যাটফর্ম টি বেছে নিন। 

কনটেন্ট তৈরি – অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং এর জন্য কন্টেন্টের ভূমিকা অপরিসীম। তবে কনটেন্ট তৈরির সময় মাথায় রাখতে হবে আপনার কনটেন্টে যেন ১০০% সঠিক তথ্য থাকে। অ্যাপলেট মার্কেটিংয়ের জন্য কয়েকভাবে কনটেন্ট তৈরি করা যেতে পারে। যেমন 

  • প্রোডাক্ট রিভিউ কন্টেন্ট 
  • ভিডিও টিউটোরিয়াল 
  • ব্লগ পোস্ট বা আর্টিকেল 
  • ইমেইল মার্কেটিং কন্টেন্ট 
  • সোশ্যাল মিডিয়া কনটেন্ট 

এরকম আরো বেশ কিছু কৌশলে কনটেন্ট তৈরি করা সম্ভব। তবে আপনার কনটেন্ট অবশ্যই SEO ফ্রেন্ডলি হতে হবে। 

লিঙ্ক ব্যবহার – আপনি যে কোম্পানির প্রোডাক্ট নিয়ে মার্কেটিং করবেন, সেই কোম্পানি থেকে আপনার প্রতিটি প্রচারণার জন্য আলাদা আলাদা লিংক পাবেন। এই লিংকগুলো আপনি বিভিন্ন প্ল্যাটফর্ম গুলোতে কনটেন্ট এর মধ্যে ব্যবহার করবেন। অনেক সময় প্রোডাক্টের লিংক অনেক বড় হয়ে থাকে। এক্ষেত্রে আপনি Bitly বা TinyURL দিয়ে লিংক সংক্ষিপ্ত করতে পারেন, এতে ইউজার ফ্রেন্ডলি হবে। 

মার্কেটিং – সবচেয়ে বড় এবং গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো মার্কেটিং। ভালোভাবে মার্কেটিং করতে না পারলে অ্যাফিলিয়েট করে আপনি কখনোই সফলতা অর্জন করতে পারবেন না। আপনার টার্গেট দর্শকদের কাছে পৌঁছানোর জন্য বিভিন্ন প্লাটফর্ম এবং কৌশল ব্যবহার করতে হবে। আপনি বেশ কয়েকভাবে মার্কেটিং করতে পারেন। যেমন

  • কনটেন্ট মার্কেটিং 
  • সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং 
  • ইমেইল মার্কেটিং 
  • ভিডিও মার্কেটিং 
  • পেইড এডভার্টাইজিং
  • কমিউনিটি মার্কেটিং 
  • ইভেন্ট মার্কেটিং 

অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং সফল করতে এ সমস্ত কৌশল গুলো অত্যন্ত জরুরী। 

অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করে কত টাকা আয় করা যায়? 

এই প্রশ্নের কোন নির্দিষ্ট উত্তর নেই। কারণ অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং এর আয় বিভিন্ন বিষয়ের উপর নির্ভর করে। যেমন অনেক ব্রান্ড CPA (Cost Per Acquisition) হিসেবে ৫-১০% কমিশন প্রদান করে আবার কেউ কেউ CPC (Cost Per Click) এর উপর ভিত্তি করে কমিশন প্রদান করে। উচ্চমূল্যের প্রোডাক্ট মার্কেটিং এর ক্ষেত্রে কমিশন বেশি পাওয়া যায় এটাই স্বাভাবিক। আবার প্ল্যাটফর্মের উপরেও কমিশন নির্ভর করে। যেমন, Amazon, ShareASale, CJ Affiliate এর মতো বড় বড় প্ল্যাটফর্ম গুলো কমিশন দেয়। এছাড়াও আপনি যদি ইউটিউব এর মাধ্যমে অ্যাপলেট মার্কেটিং করেন, এক্ষেত্রে আপনার ইউটিউব চ্যানেলের সাবস্ক্রাইবার যত বেশি হবে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং থেকে আপনি তত বেশি ইনকাম করতে পারবেন। বাংলাদেশের অনেকে এই সেক্টর থেকে হাজার হাজার ডলার ইনকাম করছে প্রতি মাসে।

অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং এর পেমেন্ট সিস্টেম 

এই সেক্টর থেকে আপনার ইনকাম বুঝে নিতে হলে আপনার ব্যাংক অ্যাকাউন্ট, paypal, Payoneer, বা Skrill অ্যাকাউন্ট থাকা প্রয়োজন। এর মধ্যে আবার কিছু কিছু মাধ্যমে শর্ত থাকে। যেমন, নির্দিষ্ট ব্যালেন্স না থাকলে সেটা আপনি উঠাতে পারবেন না। আপনার একাউন্টে যখন নির্দিষ্ট পরিমাণ ব্যালেন্স থাকবে, তখনই কেবল আপনি টাকা তুলতে পারবেন। তবে এটা সব মাধ্যমে নয়, কিছু কিছু মাধ্যম এরকম শর্ত দিয়ে থাকে। 

কিছু টিপস 

নির্দিষ্ট একটি বিষয় নিয়ে কাজ করবেন, যেটা আগেও বলেছি। এতে করে সহজেই আপনি আপনার টার্গেটেড কাস্টমারের কাছে পৌঁছাতে পারবেন। ভালো মানের কনটেন্ট তৈরি করার চেষ্টা করবেন। যদি আপনি নিজেই একজন মার্কেটিং এক্সপার্ট হয়ে থাকেন তাহলে নিজে মার্কেটিং করবেন। অন্যথায় একজন এক্সপার্ট মার্কেটার দিয়ে মার্কেটিং করাবেন, কিন্তু এ ক্ষেত্রে আপনার কমিশনের তুলনায় খরচ বেশি হয়ে যাবে, এমনকি লস ও হতে পারে। তাই অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং শুরু করার আগে নিজে মার্কেটিং স্কিল টা রপ্ত করতে পারলে সবচেয়ে বেশি ভালো হয়। 

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

এখানে কমেন্ট করুন

comment url

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ১

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ২

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ৩

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ৪